অন্যদের সামনে স্ত্রীকে বা স্বামীকে অপমান করবেন না

অন্যদের সামনে স্ত্রীকে বা স্বামীকে অপমান করবেন না। তার অসম্মান হয় এমন কথা সবার সামনে বলবেন না। মনে রাখবেন, তিনি আপনার দ্বীনকে পূর্ণ করেছেন। তিনি আপনার সংসারের সহযোগী, সহযাত্রী, বন্ধু। তার অসম্মান হলে বা সম্মানহানি হলে সেই কালিমা আপনার গায়েও এসে লাগবে।

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্ত্রীদের প্রতি ভালো ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তাদের প্রতি আমরা হিংষা-বিদ্বেষ ও শত্রুতা পোষণ না করি তা শিখিয়েছেন।

ইগো বা অহং সংসারকে ধ্বংস করে

আপনার স্বামী বা স্ত্রী হয়ত আপনার সাথে এমন কথা বলেছেন কিংবা আচরণ করেছেন যা আপনার বেশ গায়ে লেগেছে, তবু যখন আপনি রাগ দেখিয়ে, জেদ প্রকাশ করে তাকে পালটা আহত করছেন না -- এর অনেকগুলো কারণের একটি হলো, আপনাদের সম্পর্কটাকে আপনি আপনার অহং বা ইগোর চাইতে উপরে স্থান দিচ্ছেন।

অভিজ্ঞরা বলেন, বেশিরভাগ দাম্পত্য সম্পর্কের ফাটল দেখা দেয় মূলত সূক্ষ্ম কিছু অমিল আর ঘটনাকে কেন্দ্রে করে যা বিবর্ধিত হতে হতে ভয়াবহ আকার ধারণ করে যার একটি প্রধান কারণ অহংবোধ বা ইগো।

সমাধানের আগ্রহ নয়, দু'জনার সম্পর্কটাকে বড় করে দেখা নয় বরং যখন নিজেকেই বেশি বড় করে দেখা হয়, তখন সম্পর্কে বিষ ঢুকে পড়ে। অহংবোধ স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সমস্যাগুলোর সমাধানের আগ্রহটুকুও নষ্ট করে ফেলে। আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা'আলা) আমাদেরকে অহংবোধ থেকে মুক্তি দিন, জীবনসঙ্গীর প্রতি আন্তরিকভাবে কর্তব্য করে যাওয়া, দু'জনে মিলে সংসারটিকে সুন্দর করে গড়ে তোলার ও নিজেদের মাঝে সহমর্মিতা গড়ে তোলার তাওফিক দিন। 



https://www.facebook.com/dampotto.life

সম্পর্ক ও তর্ক

যারা নিজেদের সম্পর্ক ভেঙ্গেচুরে হলেও তর্কে জিততে চায় তারাই সবচাইতে বোকা ও অপরিণত মানুষ।

যারা তর্কে হেরে হলেও নিজেদের সম্পর্ককে উপরে তুলে রাখে তারাই বুদ্ধিসম্পন্ন ও পরিণত মানুষ।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদের এমন জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী দান করুন যারা আমাদের চোখের জন্য শীতলতাকারী হবে, আমাদের প্রশান্তি আনয়নকারী হবে। আমিন।

https://www.facebook.com/dampotto.life

শেয়ারিং

জীবনের অনেক বিষয়েই জীবনসঙ্গী বা জীবনসঙ্গিনীর উপরে নির্ভর করা, তার সাথে শেয়ার করার ব্যাপারটা ভালো, সেটাই স্বাভাবিক। যখন আপনি আঘাতগ্রস্ত, আপনার হৃদয় ভারাক্রান্ত, আপনি একটু দ্বিধায় আছেন, বিপদে আছেন -- আপনার জীবনসঙ্গীর কাছে কথাগুলো খুলে বলা আপনার ভারকে হালকা করবে, এটাও ঠিক। কিন্তু সত্যি কথা হলো, সমস্ত ক্ষত, ব্যথা, বিপদ, যন্ত্রণা, অসহায়ত্ব, অশান্তি থেকে মানুষকে মুক্ত করার একমাত্র ক্ষমতা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার হাতেই। জীবনসঙ্গী আপনার সাথে থাকবেন, আপনাকে এগিয়ে যেতে প্রেরণা দিতে পারবেন, আপনার ভালোর জন্য প্রাণভরা চাইতে পারবেন ঠিকই -- কিন্তু কল্যাণ ঘটানোর, উন্নতি আর মুক্তি দেওয়ার মালিক একমাত্র আমাদের রব, আমাদের মালিক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা... 

দ্বীনের অর্ধেক

আপনার জীবনসঙ্গী কিন্তু একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ নন, সেটা আশা করাও উচিৎ নয়। কল্পনার নায়ক বা নায়িকা যাকে অনেক মানুষ গড়ে তোলে ছোটবেলা থেকে, তার সাথে বাস্তব কখনো মিল হয় না। আপনার স্বামী বা স্ত্রী একজন মানুষ, যিনি তার দ্বীনকে পরিপূর্ণ করেছেন আপনার সাথে বন্ধন গড়ে। আপনি তার পোশাকের মতন, তিনিও আপনার জন্য তেমন। দু'জনের বন্ধন একে অপরের পরিপূরক হবার মাঝে। কিন্তু কখনো ভাববেন না তিনি হবেন 'পরম ও পরিপূর্ণ'। 

মানুষটার কথা শুনুন মন দিয়ে। আপনার সাথে দেখা হবার আগে তার একটা জীবন ছিলো -- আপনার মতই যুদ্ধ করে বেড়ে ওঠা, অনেক অনুভূতির, অনেক স্পর্শকাতরতার, অনেক তিক্ত আর মধুর স্মৃতিভরা। তার জীবনটাকে শ্রদ্ধা করুন। শ্রদ্ধা ও সম্মান পাওয়ার শর্তও পৃথিবীতে তেমনি -- আগে নিজেকে করতে হয়। আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী আপনার কারণে, আপনার অস্তিত্বের অনুপ্রেরণায় জগতের আর সব অশ্লীলতা থেকে সরে আছেন, থাকবেন -- তার প্রতি কোমল হওয়াও প্রয়োজন। 

আমাদের ভালোবাসাগুলো কিন্তু টেলিভিশনের পর্দায় দেখা বিশাল বিশাল বিষয়ের মাঝে নয়, বরং জীবনের নিত্যদিনের ছোট্ট ছোট্ট হাসির মাঝে, ভালোবাসার দু'টি বাক্যের মাঝে, অন্যের জন্য মন-শরীর-হৃদয় দিয়ে করা কাজগুলোর মাঝে জড়িয়ে থাকে। ভালোবাসুন, ভালোবাসাও কিন্তু এই জীবনযুদ্ধের প্রাত্যহিক কষ্টগুলোরই একটা অংশ। 

source : https://www.facebook.com/dampotto.life

কোমল ব্যবহার অপরিহার্য

জীবনসঙ্গীর সাথে সুন্দর ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিন্তা করুন, তিনি প্রতিদিন আপনার জন্য কত কিছু করছেন যা হয়ত সবই তার দায়িত্ব নয়। আপনার প্রতি ভালোবাসা থেকেই তিনি শ্রম দিচ্ছেন, আপনার সন্তান ও আপনার আব্বা-আম্মার প্রতি ভালোবাসা ও কর্তব্য পালন করছেন। এই মানুষটা অবশ্যই আপনার সুন্দর ব্যবহার পাওয়ার দাবী রাখেন। রাগ হলে সংযত করে ফেলুন, বিরক্ত হলে তার সুন্দর গুণগুলোর কথা ভাবুন, এরপর আন্তরিকভাবে তাকে বলুন কেমন করলে আপনাদের সংসারটা আরো সুন্দর হবে। 

আমাদের ঈমানকে পূর্ণাঙ্গ করতে নম্র ও কোমল ব্যবহার থাকা অপরিহার্য এবং অত্যাবশ্যকীয়। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর চরিত্রের মানুষটি এরকম সুন্দর বিষয়ই জানিয়ে গেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ

♥ "যার চরিত্র যত সুন্দর এবং নিজ পরিবারের সাথে যার ব্যবহার যত নম্র ও কোমল, তার ঈমান ততই পূর্ণাঙ্গ এবং পরিপক্ক।" ♥ 
[তিরমিজী, হাকেম] 

জীবনসঙ্গিনীর গায়ে হাত কখনো তুলবেন না

যতই রেগে উঠুন জীবনসঙ্গিনীর গায়ে হাত কখনো তুলবেন না। এটা কাপুরুষতার লক্ষণ এবং বড় অন্যায়। এই মানুষটাই আপনাকে কত ভালোবাসায় সিক্ত করেন, তা মনে রাখবেন। সুন্দর করে বলুন, বুঝিয়ে বলুন। সে বুঝবে ইনশাআল্লাহ।

https://www.facebook.com/dampotto.life

সত্য কথা বলা

আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীকে কোন সত্য কথা বলা যদি অস্বস্তিকর হয়েও থাকে, তবু মিথ্যা বলার চেয়ে তা উত্তম। একটা কথা ভেবে দেখুন, আমাদের সম্পর্কগুলোর মূলে কিন্তু বিশ্বস্ততা আর পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ। আপনার স্বামী বা স্ত্রী যদি আপনার সাথে সত্য বলেন সবসময়, আপনার প্রতি বিশ্বস্ত থাকেন -- আপনাদের সম্পর্কে চিড় ধরবে না ইনশাআল্লাহ, শয়তান আপনাদের মনে সহজে সন্দেহ সৃষ্টি করতে পারবে না।

মিথ্যা বলা একটি পাপ, আর প্রতিটি পাপ আরো অনেকগুলো পাপের জন্ম দেয়। এভাবে একটা মিথ্যা কথা আমাদেরকে আল্লাহর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, জীবনসঙ্গী তো বটেই। আসুন, একটু অস্বস্তি, বিব্রতবোধ হলেও সত্য বলা থেকে আমরা পিছপা না হই। আল্লাহ আমাদের পরিবারগুলোর মাঝে রাহমাত দান করুন।

https://www.facebook.com/dampotto.life

কোমলতা

দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসার প্রকৃত পরিচয় ব্যবহারে। আপনার জীবনসঙ্গীর প্রতি আপনি কতটা কোমল, মিষ্টভাষী -- তার মাঝে আপনার চরিত্রের সৌন্দর্য ফুটে উঠবে। দেখবেন, আপনার সঙ্গী/সঙ্গিনী আপনার কোমল কন্ঠের ভাষাটাই বেশি ভালবাসেন। রাগ দেখাবেন না, রূঢ় ভাষা সংযত করুন -- এগুলো সম্পর্ককে ধ্বংস করে। আন্তরিকভাবে এই চেষ্টা করা উচিত। একদিনে হয়ত পারা যায় না, কিন্তু এই ইচ্ছেটা আপনার আচরণগুলোকে সৌন্দর্যময় করতে পারে, ধীরে ধীরে আপনার ব্যবহার সুন্দর হয়ে উঠবে ইনশা আল্লাহ। কোমল আর বিনয়ী মানুষকে কেউ ভালো না বেসে পারে না। আপনার ভালোবাসার প্রকাশটাই আপনাকে ভালোবাসা এনে দিবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা কোমলচিত্ত, তিনি সবকিছুতে কোমলতাকে পছন্দ করেন।

https://www.facebook.com/dampotto.life

আপনার জীবনসঙ্গী ঘরে ফিরলে তাকে সুন্দর করে গ্রহণ করুন

হে আমার বিবাহিতা বোন, আপনার জীবনসঙ্গী ঘরে ফিরলে তাকে সুন্দর করে গ্রহণ করুন, অভ্যর্থনা জানান।

অফিসে যাওয়া, স্কুলে যাওয়া, বাইরে ভ্রমণে যাওয়া বা অন্য যা-ই আপনাদের দু'জনকে আলাদা করেছিলো, সেটা শেষ হয়ে যাবার পরে তাকে আন্তরিক ও সুন্দর একটি অভ্যর্থনা দিন যা তার মন ভালো করে দিবে, আপনাদের বন্ধনকে আরো গাঢ় করবে...

- দরজাটা নিজে খুলুন, আপনার মিষ্টি হাসিটি তাকে উপহার দিন।
- দু'জনের মাঝে শান্তিময় পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আল্লাহর কাছে দু'আ চেয়ে তাকে বলুন, "আসসালামু আলাইকুম।" 
- সুগন্ধী বা পারফিউম ব্যবহার করে নিজেকে আকর্ষণীয় করে নিতে পারেন।
- আপনার জীবনসঙ্গীকে সুসংবাদটি তাড়াতাড়ি দিন এবং খারাপ সংবাদ থাকলে দেরি করে জানান।
- সৌহার্দপূর্ণ ভালোবাসার গলায় তার সাথে কথা বলুন।
- ফ্রেশ হয়ে নিতে তার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো এগিয়ে দিন।
- একটু কষ্ট করে তার জন্য সময়মত খাবারটি পরিবেশন করুন।
- আপনাদের দু'জনের আবার দেখা করিয়ে দেয়ায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া করুন দু'জন মিলে, আলহামদুলিল্লাহ। যারা কৃতজ্ঞ হয় আল্লাহর প্রতি, আল্লাহ তাদের প্রতি তার দানকে আরো বাড়িয়ে দেন।

https://www.facebook.com/dampotto.life

আমি তোমাকে ভালোবাসি

অনেক সময় বিয়ের পর থেকে জীবনের নিত্যদিনের নানান টানাপোড়েনের ফলেই হয়ত, কাছাকাছি থেকেও দু'জনের মাঝে যেন বিয়ের সেই প্রথম সময়ের মতন আনন্দের তরঙ্গ খেলে না। দু'জন যেন কিছু দায়িত্বপালন করতেই পাশাপাশি থাকা। আটপৌরে হয়ে যাওয়া এই সম্পর্কটাকে একটু অন্যভাবে দেখাই কল্যাণকর। জীবনসঙ্গীর প্রতি এমন সাদামাটা অনুভূতি তৈরি হওয়া কিন্তু অস্বাভাবিক নয়। নানান কারণে এমনটা হতেই পারে। তবে হ্যাঁ, নিজে থেকে ছোট্ট একটা উদ্যোগ নিতে পারেন। তার জন্য অন্যান্য দিনের চাইতে একটু অন্যরকম কিছু আয়োজন করুন, খুব সামান্য কিছু ভিন্নতা নিয়ে আসুন। হয়ত দু'জনে যখন খেতে বসলেন। অথবা,অন্য একটা সময় সে একটু সচেতন আপনার প্রতি, তখন তাকে বলুন, আপনি তাকে ভালোবাসেন। 

ভালোবাসার কথা জানাতে হয়, সংকোচের কিছু নেই। আপনি কি একটু মুখচোরা স্বভাবের? অথবা অন্তর্মুখী? তাতে কী? ভালোবাসার কথাটা জানিয়ে দিন প্রিয় মানুষটিকে, এমনকি পরিবারের অন্যান্য যাদের ভালোবাসেন তাদেরকেও জানিয়ে দিন। যখন আপনি আপনার জীবনসঙ্গীকে জানাবেন আপনি তাকে ভালোবাসেন, তিনি আরেকটু আত্মবিশ্বাসী হবেন, নিজের আরেকটু যত্ন নিবেন। এই অনুপ্রেরণা তাকে তার ভারগুলো বইতে সাহায্য করবে, আল্লাহর ইবাদাতে মন দিতেও উৎসাহ যোগাবে ইনশা আল্লাহ। অনেকসময় এই ভালোবাসার অনুভূতিটুকুও একটা শক্ত অবলম্বন হয় একটা মনের মাঝে। 

বিষয়টাকে হালকা করে নিবেন না, আপনাকে বা আপনাদের যে অনেক রোমান্টিক হতে হবে -- এটা এমন ব্যাপার নয়। এটা একটা প্রয়োজনীয়তা, আমাদের সবার জন্য। আল্লাহর জন্য যাদের ভালোবাসি আমরা, তাদেরকে জানাতে হয় ভালোবাসার কথা। আল্লাহকে ভালোবাসে যে অন্তর, সেই অন্তরের সেই বিশাল ভালোবাসা থেকেই অন্যদেরকে ভালোবাসা বিলিয়ে দিবো আমরা। যদি অনেকদিন না বলা হয়ে থাকে তবে আজই প্রিয়জনকে বলুন, ধরুন এভাবে বলতে পারেন,  

"একটা কথা শুনো, মন দিয়ে চুপ করে শুনতে হবে। কথাটা হলো.... আমি তোমাকে ভালোবাসি।"

https://www.facebook.com/dampotto.life

জীবনসঙ্গীর ভুলগুলো

অনেকেই মাঝে মাঝে জীবনসঙ্গীর ভুলগুলো সহ্য করতে গিয়ে বিরক্ত হয়ে যান। 'কেন তার এমন ভুল হবে, কেন যে বুঝে না' -- এরকম প্রশ্ন মনে জেগে ওঠে। একটা কথা কিন্তু মনে রাখতে হবে, কোন মানুষ ' পারফেক্ট' নয় পৃথিবীতে, বিয়ের সময় কেউ আমরা নিখুঁত মানুষকে বিয়ে করিনা। আমরা সবসময় চেষ্টা করি নিজেদের উন্নত করার। স্বামী-স্ত্রী তো একজন আরেকজনের 'চাদর', একে অপরের দ্বীনের অর্ধেক, দ্বীনকে পূর্ণ করতে এই বন্ধন। দু'জন দু'জনের পরিপূরক। তাই, সঙ্গীর জন্য যতই কষ্ট করবেন, ভালোবাসা দেবেন, যত্ন নিবেন -- মূলত আপনি আপনার জন্যই কাজ করছেন, নিজেকেই সাহায্য করছেন। আল্লাহ তো আখিরাতে আমাদের প্রয়োজনের সময়টিতে জীবনে করে যাওয়া প্রতিটি ভালো কাজের বিনিময় দেবেন, আমাদের  সংসারটি হোক তখন মুক্তি পাওয়ার একটি মাধ্যম। আল্লাহ অভাবহীন, দয়াময়, প্রেমময়, ক্ষমাশীল; তার রাহমাতের ঝর্ণাধারা ঝরে পড়ুক আমাদের সংসারগুলোতে... 

কখনো কখনো একটু অনুপ্রেরণা জীবনটাকে একদম বদলে দেয়

দু'জনের জীবন মানেই নিজ নিজ কাজের ভার বয়ে নেয়া। তাই বলে অনেকদিন হয়ে গেছে, দু'জনকে চিনে গেছি বলে সব সাদামাটা হয়ে যাবে? বলুন তো, কাপড় ক'দিন পরার পর একটু নতুন করে ধুয়ে নিই না আমরা? তাতে সুগন্ধি লাগিয়ে নিই না? সম্পর্কটাকেও মাঝে মাঝে একটু ঝালাই করে নিতে হয়।

আপনার বর তো প্রতিদিন কতকিছুই করেন, কেনাকাটাও করেন। তার আনা যে জিনিসটা ভালো লেগেছে, একটু প্রশংসা করলে কী এমন হয়ে যাবে? আপনার স্ত্রী তো প্রতিদিন রেঁধেই চলেছেন আপনার জন্য। তরকারিটা ভালো লাগলো, স্বাদ করে খেতে খেতে একটু বলুনই না আপনার ভালো লাগার কথাটা...

কখনো কখনো সুন্দর একটু প্রশংসা, একটু অনুপ্রেরণা জীবনটাকে একদম বদলে দেয়, মোড় ঘুরিয়ে দেয় চিন্তার, ভালোলাগা আর ভালোবাসার বন্যা এনে দেয়। দেখবেন, হয়ত আনন্দে তার চোখে পানি এসে যাবে। মুছে দিতে গিয়ে বুঝবেন -- অল্প কিছুর মাঝেই কত আনন্দ মিশে থাকতে পারে... :)
https://facebook.com/dampotto.life

পৃথিবীর কেউ কিন্তু পারফেক্ট না

পৃথিবীর কেউ কিন্তু পারফেক্ট না। সঙ্গী বা সঙ্গিনীর দিকে তাকিয়ে দেখুন, হয়ত অমিল আছে, তার সীমাবদ্ধতাও আছে, কিন্তু তিনি আপনার জন্য যেটুকু করেন, সেটুকু নিখাদ আবেগের। সেই ভালোবাসাটুকু সাথে করে সেটুকুকে বড় করে দেখুন, আপনার মনটাও ভালো হয়ে যাবে। অনেক সময় আমাদের মনের দৃষ্টিভঙ্গিটুকুই আমাদের সুখ-দুঃখের কারণ হয়। ভালোটুকুর প্রতি মন দিন, সুখ খুঁজে পাবেন ইনশা আল্লাহ। শুধু তার জন্য একটা উপহার দেননি কতদিন হলো? দামী-কমদামী বিষয় নয়, শুধু একটা উপহার, যে উপহারটি শুধু সে ছাড়া আর কেউ দেখবে না, জানবেও না। কিন্তু আপনার জীবনসঙ্গী/সঙ্গিনী জানবেন সে আপনার কাছে অন্য সবার মতন নন, ব্যতিক্রম। আটপৌরে সম্পর্ককে মাঝে মাঝে পানি দিয়ে সতেজ করতে হয়। এইটুক উদ্যোগ আপনার জীবনে অনেক ভালো কিছু কল্যাণ এনে দেবে ইনশা আল্লাহ, আজই একবার কাজটা করেই দেখুন! 

চরিত্রবান নেককার স্ত্রী হলো আপনার জীবনের কল্যাণকর ও উত্তম সম্পদ

সম্পদ কি তা কি সবাই বুঝি? পুরুষেরা অনেক সময় সম্পদ অর্জনের জন্য এখানে-ওখানে খুঁজে অস্থির হয়ে যায়, নিজ ঘরের ব্যাপারে উদাসীন হয়ে পড়ে। টাকা-কড়িই কি কেবল সম্পদ? সেই সাথে বাড়ি-ঘর আর জমি-জমা-গাড়ি? শুধু অর্থসম্পদ কি আপনাদের সন্তানদের সুসন্তান করে গড়ে তুলতে পারবে? সন্তানেরা কার তত্ত্বাবধানে আর যত্নে বড় হয়, তা ভেবেছেন?

হে ভাই, জীবনসঙ্গিনীর ব্যাপারে ভেবে দেখেছেন? একটা পরিবারে একজন নারী হলেন সংসারের স্থপতি, তার হাতের নিবিড় পরিচর্যায় বড় হয় আপনাদের সন্তানেরা, যখন আপনি জীবিকার কাজে বাইরে ব্যস্ত থাকেন তিনি আগলে রাখেন সংসারটিকে। তিনি আপনার চিন্তাগুলোর প্রভাবক -- ভালো চিন্তা হোক, ভুল চিন্তা হোক, দুনিয়াবী চিন্তা হোক, আখিরাতের চিন্তা হোক। 

অল্প সম্পদকেও অনেক বেশি সম্পদ মনে হতে পারে যখন একজন ভাইয়ের জীবনসঙ্গিনী তার যা আছে সেগুলোতেই সন্তুষ্ট থেকে তাকে আল্লাহর উপরে ভরসা করে অর্থ উপার্জনের জন্য সাধ্যমতন চেষ্টাটুকু করতে উৎসাহ দিবেন। তখনই আপনার সবকিছু সুন্দর হবে, ছোট্ট ঘরটিকেও বড় মনে হবে, কষ্টের জীবনটিকেও আল্লাহর দেয়া পরীক্ষা হিসেবে সহনীয় আর কল্যাণকর হিসেবে খুঁজে পাবেন যখন দ্বীনদার স্ত্রী আপনার সঙ্গী হবেন এবং আপনিও যখন দ্বীনদার স্বামী হিসেবে তার যোগ্য জীবনসঙ্গী হবেন। 

প্রকৃত সম্পদ কী তা বুঝে নিতে তাই ভুল করবেন না যেন কখনো!! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ

♥"সমগ্র পৃথিবীটাই সম্পদে পরিপূর্ণ। এর মধ্যে কল্যাণকর ও উত্তম সম্পদ হল চরিত্রবান নেককার স্ত্রী।"♥
[মুসলিম]

https://www.facebook.com/dampotto.life

বাইরে ঘুরে আসুন

জীবনসঙ্গী/সঙ্গিনীর সাথে অনেকদিন ধরে জীবনের অনেক সময় শেয়ার করা হয়ে গেলেও শেষ কবে শুধু দু'জনে মিলে একটু ঘুরতে বের হয়েছিলেন দু'জনে তা অনেকেরই মনে থাকে না। হয়ত অনেকদিনের সংসার, অনেক কাজ, অনেক ঘটনা আর অনেক টানাপোড়েনে খেয়ালই নেই এসব ভাবার। কিন্তু নিজেদের এই সম্পর্কটা ফুলে পানি দিয়ে তাজা করে রাখার মতন একটু জিইয়ে রাখতে হয়। অনেক কিছুর মাঝেও একটু সময় করে নিন, দু'জনে মিলে একটু বের হোন।একটু বের হয়ে ঘুরে আসুন একসাথে, অনেক খরচ করতে হবে না। শুধুই একটা পথ চলা একসাথে, কিছু গল্প, কিছু খুনসুঁটি... স্রেফ এইটুকুতেই হয়ত হৃদয়ে আনন্দের ফল্গুধারা বইতে পারে দু'জনার... আজই ভেবে দেখুন! :)