পরস্পরের প্রতি চাওয়া ও ভালোবাসা নিয়ে একটা সুন্দর কিউট চিঠি!

​​এক সুন্দর দম্পতির পরস্পরের প্রতি চাওয়া ও ভালোবাসা নিয়ে একটা সুন্দর কিউট চিঠি! <3
...

তোমাকে জীবনের সাথে যেদিন থেকে বেঁধে নিয়েছি সঙ্গী করে, প্রতিদিন দোয়া করি--

তুমি যেন সুস্থ থাকো, যেন শান্তি পাও তোমার জীবনে।
আল্লাহ যেন তোমাকে জান্নাতী হবার যোগ্যতা দেন।
আমি যেন তোমার দেখাশোনা ও সেবা করতে পারি।
আমি যেন তোমার সহযোগীর দায়িত্বটুকু পালন করতে পারি।
আমি যেন তোমার হাসিমুখ থাকার কারণ হতে পারি।
আমি যেন তোমার সাথে খারাপ আচরণ না করি।
আমি যেন তোমার চোখের অশ্রু না ঝরাই।
যেন দু'জন দু'জনার সাথে রাগ করে শয়তানকে খুশি না করি।
আমি যেন তোমার সাথে অন্যায় না করি।
আল্লাহ যেন আমাদের সুসন্তান দান করেন।
আমাদের সন্তানেরা যেন দুনিয়ার জন্য কল্যাণস্বরূপ হয়।
আমাদের সন্তানেরা যেন মু'মিন, মুত্তাকী ও মুজাহিদ হয়।
আমরা যেন হায়াতান তাইয়্যেবা লাভ করি।
আমরা যেন দু'জন দু'জনার ঈমান বৃদ্ধি হবার কারণ হই।
আল্লাহ যেন জান্নাতেও আমাদেরকে একসাথে থাকার তাওফিক দেন।
আল্লাহ যেন আমাদের উপরে সন্তুষ্ট থাকেন।

দাম্পত্য জীবনের খুব সুন্দর একটা মূহুর্ত

দাম্পত্য জীবনের খুব সুন্দর একটা মূহুর্ত হলো, যখন আপনাদের নীরবতাটুকুর মাঝেও আপনার জীবনসঙ্গীর অনেক কথা আপনি বুঝতে পারেন... সুবহানাল্লাহ!

যখন আপনার স্বামী/স্ত্রী কিছু মুখ ফুটে বলার আগেই আপনি বুঝে যান কী বলবে সে, সেই মূহুর্তটা খুব অসাধারণ, তাইনা? এমন কিছু ভালোবাসা আমরা খুঁজে পাই নিত্যদিনের নানান দায়িত্ব আর কাজের মাঝে। আল্লাহ আমাদের সংসারগুলোকে প্রশান্তির আবাস করে দিন।

আপনার জীবনসঙ্গীকে আপনি ভালোবাসেন, এই কথাটা শেষ কবে বলেছেন?

​আপনার জীবনসঙ্গীকে আপনি ভালোবাসেন, এই কথাটা শেষ কবে বলেছেন? ছোট্ট অভিমান, কিছু বিরক্তি কিংবা অপূর্ণতাকে পুঁজি করে তাকে আপনার ভালোবাসার কথা বলা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন না। কে জানে, এমনো তো হতে পারে হয়ত আপনি তাকে "আমি তোমাকে ভালোবাসি" কথাটা বলার আরেকটা সুযোগ পাবেন না। ভালোবাসার মানুষটিকে ভালোবাসার কথা বলুন, শুধু তার কাছ থেকে কিছু পেতে চেয়ে নয়, বরং বলুন আপনার নিজের জন্যই। আপনি যখন ভালোবাসবেন, তখন নিজেকে অভিমান, রাগ, ক্ষোভের কারাগার থেকে নিজেকে মুক্তি দিতে পারবেন। আপনার ভালোবাসার কথা ও আবেগ আপনার কাছে ভালোবাসা ফিরিয়ে দেবে। আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীকে দিনে অন্তত একবার বলুন যে তাকে আপনি ভালোবাসেন। ভালোবাসা এবং ভালোবাসার কথা আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তোলে, প্রিয়জনদের প্রতি ভালোবাসা আমাদেরকে মুক্তির প্রশান্তিময় অনুভূতি দেয়।

দাম্পত্য জীবনে সুখী হবার একটা উপায়

অমিলগুলোর দিকে তাকিয়ে অশান্তি করে নয়,
পারস্পরিক মিলগুলো থেকে আনন্দ খুঁজে পাওয়া দাম্পত্য জীবনে সুখী হবার একটা উপায়...

সম্পর্ক টিকে থাকে জটিল সময়ে ধৈর্য ও ভালোবাসায়

​​একবার এক দম্পতিকে জিজ্ঞাসা করা হলো তারা কীভাবে একসাথে ৬০ বছর কাটিয়েছিলেন। তারা উত্তর দিয়েছিলেন,  আমরা যে সময়টাতে জন্মেছিলাম তখন কোন কিছুতে সমস্যা দেখা দিলে তার মেরামত করে সারিয়ে নিতাম, ছুঁড়ে ফেলে দিতাম না।

আপনাদের সম্পর্কটি খেয়াল করুন। দেখবেন প্রতিদিনই হয়ত নিত্যনতুন কিছু সমস্যা আসবে। কিন্তু আল্লাহকে স্মরণ রেখে, তার কাছে সাহায্য চেয়ে বিষয়গুলো দু'জনে মিলে আলাপ করুন। ভালোবাসার এই সম্পর্কটিতে অপরজনের কাছে ছোট হবার মতন কিছু নেই কেননা সংসার আপনাদের দু'জনের মিলেই। আপনিই বরং আগে ক্ষমা চেয়ে নিন, তার প্রতি আপনার ব্যাকুলতার কথাটি বোঝান। আপনি ভালো থাকা মানে তিনি ভালো থাকা, তার ভালো থাকাও আপনার ভালো থাকা।

সমস্যা হলে সমাধান করার কথা ভাবুন। দেখবেন ভালোবাসা আর আন্তরিকতা দিয়ে যেকোন পরিস্থিতিই সামাল দিতে পারবেন দু'জনের মাঝে। শয়তান খুবই খুশি হয় দাম্পত্য সম্পর্কে অশান্তি তৈরি করতে পারলে। খেপে যাবেন না। আল্লাহর কাছে সাহায্য চান, মাথা ঠান্ডা রাখুন। ভালোবাসা দিয়ে, ধৈর্য দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করুন। দেখবেন ছোট ছোট সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠে আপনার স্বামী/স্ত্রীকে আপনি আরো বেশি ভালোবাসবেন। আল্লাহ আমাদের পরিবারগুলোতে শান্তি দান করুন।

সমস্যা কিন্তু কখনই তোমার এবং আমার মাঝে নয়

এক ভাই বলেছিলেন, আমার বিয়ের পরে একটা ব্ল্যাকবোর্ডে একদিকে আমার এবং আমার স্ত্রীর নাম এবং অন্যদিকে শয়তানের নাম লিখলাম। এরপর আমার স্ত্রীকে বললাম, "সবসময় মনে রাখবে, আমাদের মধ্যে যখনই কোন সমস্যা তৈরি হবে, সেটা কিন্তু আমাদের দু'জনের সাথে এইটার যুদ্ধ; কখনই তোমার এবং আমার মাঝে নয়।"

[সংগৃহীত ও অনূদিত]

সংসারে ভালোবাসার বন্ধন

​​​​​​আপনি যখন আল্লাহকে খুশি রাখতে আপনার স্বামী বা স্ত্রীকে ভালোবাসবেন, তখন আপনি কিন্তু সে কেমন করে রেস্পন্স করছে আপনার কেয়ারগুলোর, আপনার ভালোবাসাটুকুর, আপনার আবেগ আর সচেনতনতাটুকুর -- সেটা হিসেব করবেন না। ভালোবাসা জিনিসটাই এমন যে তা কোন ফিডব্যাক দাবী করে না। রিপ্লাই আশা করলে সেটা তখন "বিনিময়" হয়ে যায়। আপনার প্রিয় মানুষটিকে ভালোবাসুন আপনার নিজের জন্যই। তবে এটা ঠিক, আল্লাহর জন্য যখন কাউকে ভালোবাসবেন, তখন আল্লাহ আপনার অন্তরে প্রশান্তি দিবেন। হয়ত তিনি আপনাদের হৃদয়ে এমন ভালোবাসার বন্ধন তৈরি করে দেবেন যা শতবর্ষ চেষ্টাতেও কারো তৈরি করা সম্ভব হয় না।

মনে রাখবেন, ভালোবাসা সৃষ্টির মালিক আল্লাহ। তিনিই হৃদয়গুলোতে ভালোবাসার বীজ বপন করে দেন, অতঃপর তাকে বেড়ে ওঠান। ভালোবাসার বন্ধনগুলোর মাঝে আল্লাহ থাকুক কেন্দ্রবিন্দুতে। তাহলে খুব ভালো সময়টাতেও আপনি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবেন, আবার টানাপোড়েন চলে আসলেও আপনি আঘাতে ও কষ্টে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে যাবেন না, আল্লাহর উপরেই নির্ভর করবেন। যিনি কঠিন সময়ে মাথা ঠান্ডা রাখেন, তিনি কম ক্ষতিগ্রস্ত হন। ধৈর্যশীল মানুষরা জানেন এই সময়টা কেটে গেলেই তিনি আবার সব গুছিয়ে এগিয়ে যেতে পারবেন। আল্লাহ গাফুরুল ওয়াদুদ, তিনি প্রেমময় ও ক্ষমাশীল। আল্লাহ যেন আমাদের সংসারগুলোতে শান্তি ও নিরাপত্তা দান করেন।

​​সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় ২০ টিপস

​​সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় টিপস জেনে নিন-

১) একে অপরকে জানিয়ে দিন যে আপনারা পরস্পরকে ভালোবাসেন।
২) একই সময়ে দু'জন একসাথে রেগে যাবেন না।
৩) সমালোচনা যদি করতেই হয়, ভালোবাসা দিয়ে বলুন।
৪) পুরোনো ভুলগুলোকে তুলে আনবেন না।
৫) কোন তর্ক জিইয়ে রেখে ঘুমাতে যাবেন না, সমাধান করে নিন আগেই।
৬) একে অপরকে উপেক্ষা করার পরিবর্তে বরং গোটা দুনিয়াকে আগে উপেক্ষা করুন।
৭) দিনে কমপক্ষে একবার একসাথে সালাত আদায় করুন।
৮) মনে রাখবেন, সকল সফল স্বামী বা স্ত্রীর পেছনে একজন শ্রান্ত পরিশ্রমী জীবনসঙ্গী থাকে যে সবকিছু ভুলে একটানা কাজ করে যায় অপরজনকে সচল ও সতেজ রাখতে।
৯) মনে রাখবেন, ঝগড়া করতে দুই জনের প্রয়োজন হয়।
১০) আপনি যখন কোন ভুল করে ফেলবেন, তা স্বীকার করে নিন।
১১) দিনে অন্তত একবার আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর প্রশংসা করুন কিংবা তাকে ভালোবেসে দয়ামাখা গলায় কথা বলুন।
১২) আপনার স্বামী/স্ত্রী বিছানায় যাওয়ার পর আপনি বিছানায় যেতে ১০ মিনিটের বেশি বিলম্ব করবেন না।
১৩) আপনার জীবনসঙ্গী যখন কিছু বলে, তা মন দিয়ে শুনুন।
১৪) মনে রাখবেন, আপনার স্বামী/স্ত্রী কিন্তু একটা ক্রিকেট বা ফুটবল ম্যাচ, মুভি, সিরিয়াল, ইউটিউব ভিডিওর চেয়ে বেশি মূল্যবান।
১৫) আপনার সঙ্গিনী/সঙ্গী যখন নতুন কোন পোশাক পরে তথবা তার চুল ভিন্নভাবে আঁচড়ায় তখন খেয়াল করুন।
১৬) আপনাদের বিবাহবার্ষিকী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোকে স্মরণ রাখতে চেষ্টা করুন।
১৭) আপনাদের পক্ষ থেকে আপনার সঙ্গী কাউকে কোন উপহার দিলে বা কোন কাজ করে দিলে আপনার পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ দিন।
১৮) যিনি দেরিতে ঘুম থেকে উঠবেন, বিছানা গুছিয়ে রাখুন।
১৯) আপনার স্বামী/স্ত্রীকে যদি ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত দেখায় তবে তা লক্ষ্য করুন এবং তার জন্য কিছু করুন।
২০) আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীকে কখনো সমালোচনা করে আহত করবেন না এবং জনসমক্ষে কখনো তাকে অপমান করবেন না।

[রুকাইয়া ওয়ারিস মাকসুদের 'The Muslim Marriage Guide' বইটির ৬৫-৬৬ পৃষ্ঠার আলোচনার আলোকে রচিত]

# এরকম আরো কিছু টিপস পেতে চাইলে দেখুন: www.dampotto.blogspot.com

দাম্পত্য জীবনের প্রদর্শনী সোশাল নেটওয়ার্কে করবেন না

আপনার দাম্পত্য জীবনের সুখের প্রদর্শনী অনুগ্রহ করে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতন সোশাল ওয়েবসাইটে করবেন না। নিজেদের আনন্দের সময়ের ছবি আপলোড না করাই উত্তম। আপনার আনন্দ-ভালোলাগা-সুখকে নিজেদের মাঝেই রাখুন, দু'জনে মিলেই উপভোগ করুন। মনে রাখবেন, মানুষের বদনজর তখন কিন্তু আপনার দিকে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে যাবে। বদনজরের ব্যাপারটা কিন্তু সত্য। আশা করি আগ্রহ করে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হতে চান না...

একইভাবে আপনার লাইফ পার্টনারের খারাপ বিষয়গুলো সরাসরি বা আকারে ইংগিতে ফেসবুকে-টুইটারে উল্লেখ করবেন না। শয়তান আপনার এই কাজটুকুকে কতভাবে যে টুইস্ট করে অন্যের মনে ঢুকিয়ে আপনার জীবনে একে বড় দুর্যোগে পরিণত হবার কারণ করতে পারে। সোশাল নেটওয়ার্কে দাম্পত্য বিষয়গুলো উল্লেখ করার আগে অনেকবার ভেবে নিন। দায়িত্বহীন কাজের ফল মানুষকে ভোগ করতেই হয়।